সাটুরিয়ার ভয়াল টর্নেডো: ৩৬ বছর পরও কাঁদে ইতিহাস
আজ ২৬ এপ্রিল, সাটুরিয়ার ইতিহাসের এক শোকাবহ দিন। ১৯৮৯ সালের এই দিনে পৃথিবীর অন্যতম ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ঘটেছিল ধ্বংসের বিভীষিকা। আজ সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার ৩৬ বছর পূর্তি। ৩৬ বছর আগে এই দিনে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় নেমে এসেছিল ইতিহাসের এক ভয়াল দিন। ১৯৮৯ সালের ২৬ এপ্রিল বিকেলে বয়ে যাওয়া ধ্বংসাত্মক টর্নেডো মুহূর্তের মধ্যে শেষ করে দিয়েছিল হাজারো জীবন, স্বপ্ন আর সুখের সংসার।
এখনও এই দিনটি এলেই আতঙ্ক আর কান্নায় ভিজে ওঠে সাটুরিয়ার মানুষ। মাত্র কয়েক মিনিটের তাণ্ডবে সাটুরিয়ার প্রাণ হারায় প্রায় ১,৩০০ মানুষ। আহত হয় অন্তত ১২ হাজার এবং প্রায় এক লাখ মানুষ হয়ে পড়ে গৃহহীন। উপজেলার ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাজার, স্কুল-কলেজ, সরকারি স্থাপনা ও হাজার হাজার গাছপালা একেবারে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
বিশেষ করে দুই শতাব্দী পুরনো সাটুরিয়া বাজার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সেদিনের ভয়াল স্মৃতিচারণ করে সাটুরিয়া বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী মো. পিয়ার আলী বলেন,"সকাল থেকেই প্রচণ্ড গরম ছিল, বাতাসের কোনো অনুভূতিই ছিল না। বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল শব্দে ধেয়ে আসে সেই বিভীষিকাময় টর্নেডো। মুহূর্তেই সবকিছু ধূলিসাৎ হয়ে যায়।" তিনি আরও জানান,"আমি নিজেও মাথায় গুরুতর আঘাত পাই। বহুদিন বিছানায় পড়ে ছিলাম। প্রতিবছর ২৬ এপ্রিল এলেই সেই ভয়ঙ্কর দিনটির দৃশ্য এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।" আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন,"আমরা চোখের সামনে দেখেছি কীভাবে পুরো গ্রামটা ধ্বংস হয়ে গেল। মানুষজন কাঁদছিল, আর্তনাদ করছিল, কেউ কেউ প্রিয়জনের খোঁজে ছুটছিল ধ্বংসস্তূপের মাঝে।
" টর্নেডোটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে অনেকে কয়েকশ মিটার দূরে ছিটকে পড়েন। বহু পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, কয়েক হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়, প্রায় ৪০০ দোকানপাট উড়ে যায়, সরকারি খাদ্য গুদামসহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি তথ্যমতে, এটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রাণঘাতী টর্নেডোগুলোর একটি। টর্নেডোর পরপরই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী দল ও সরকার ব্যাপক উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। পুনর্বাসন কার্যক্রমও চালানো হয়, তবে হারানো প্রাণ আর ফিরে আসেনি। প্রায় ৪০০ দোকান সম্পূর্ণ ভেঙে যায়, সাটুরিয়ার সরকারি খাদ্য গুদামসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন ধ্বংস হয়। বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফসলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। বহু পরিবার হারায় তাদের পুরো সদস্য পরিবারকে। সেই সময় সরকারের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবক দল উদ্ধার কার্যক্রম ও পুনর্বাসন কাজে অংশ নেয়। বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ টর্নেডোর তালিকায় স্থান পাওয়া এই দুর্যোগটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হয়ে রয়েছে।
৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সাটুরিয়ার মানুষ সেই দিনের ভয়াবহতা ভুলতে পারেনি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আরও কার্যকর প্রস্তুতি ও সচেতনতা গড়ে তোলা হোক। আজ সাটুরিয়ার বিভিন্ন স্থানে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। একই সাথে দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য,১৯৮৯ সালের ২৬ এপ্রিল বিকেল।সাটুরিয়ার আকাশ ধীরে ধীরে কালো হয়ে উঠছিল। বাতাস যেন থমকে গিয়েছিল। আশপাশের প্রকৃতি নীরব। আর ঠিক সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে, বিকাল ৫টার দিকে, নেমে আসে এক বিভীষিকাময় দানব—টর্নেডো। মুহূর্তেই যেন সময় থেমে যায়, জীবন থেমে যায়। আজ ৩৬ বছর পরও, সেই দিনের কথা মনে করলেই শিউরে ওঠেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার মানুষ। আকাশে-বাতাসে তখন শুধুই কান্না আর আর্তনাদ।
প্রচণ্ড ঘূর্ণির শক্তিতে উড়ে গিয়েছিল ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গাছপালা, মানুষের জীবন। ১৯৮৯ সালে দেশে দুর্যোগ পূর্বাভাসের অবকাঠামো ছিল না বললেই চলে। জনসাধারণের কাছে আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছায়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ভয়াবহ মাত্রায়। টর্নেডোর পরে সাটুরিয়ার মানুষ শুরু করে নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াই। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় শুরু হয় পুনর্বাসন। নতুন করে বাজার গড়ে ওঠে, ঘরবাড়ি বানানো হয়। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জন, স্মৃতি আর জীবনের স্বপ্নের কোনোটাই ফিরে আসেনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আজ অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে টর্নেডো-জাতীয় আকস্মিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও সচেতনতা এবং আগাম প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সাটুরিয়ার সেই ভয়াল টর্নেডো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির সামনে মানুষ কতটা ক্ষণিক, আর বেঁচে থাকার লড়াই কতটা দুর্দান্ত।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আরিফুর রহমান অরি
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফেরাত ও চিকিৎসাধীন আহতদের সুস্থতা কামনায় ২৫ জুলাই ২০২৫ ইং শুক্রবার বিকাল ৪:০০ টায় সোনাগাজী সমিতি ঢাকার উদ্যোগে সমিতির নিজস্ব কার্যালয় আকরাম টাওয়ার ৩য় তলা বিজয় নগর ঢাকায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।উপস্থিত ছিলেন সমিতির সন্মানিত সভাপতি জনাব মেজবাহ উদ্দিন খান কিসলু (সি আই পি), সহ সভাপতি জনাব নাজমুল করিম দুলাল, সহসভাপতি জনাব ইব্রাহিম বাহার, যুগ্ম সম্পাদক জনাব এডভোকেট সালাউদ্দিন শিমুল, সুলতান মোঃ কামাল উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ জনাব নুরুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব জাহাঙ্গীর আলম রাজ, জনাব আমির হোসেন জনি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আকরাম হোসেন রিংকু,দপ্তর সম্পাদক জনাব নুরুল করিম ভূইয়া,সহদপ্তর সম্পাদ সাহাদাত হোসেন হেলাল,র্নিবাহী সদস্য মোহাম্মদ মোস্তফাসহ সমিতির সন্মানিত নের্তৃবৃন্দ।এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সন্মানিত দাতা সদস্য ও আজীবন সদস্যবৃন্দ ।দোয়া পরিচালনা করেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন জনাব মুফতি আমিমুল এহসান সাহেব।
“আম্মু আমি আজ স্কুলে যাব না।”৭ বছরের বয়সী জুনায়েদের কথা শুনে মা ধ'ম'কে বললেন,“একদম না যাওয়ার বায়না ধরবে না জুনায়েদ। যেতে হবে, চলো রেডি হও।”“মা, ভালো লাগছে না আমার। কাল থেকে যাই?”“না, বাবা এখনি যেতে হবে। স্কুল থেকে আসার পর, তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাব। কেমন?”জুনায়েদের চোখ চকচক করে উঠল। বলল,“সত্যি!”“হ্যাঁ, সত্যি।”জুনায়েদকে স্কুলের জন্য রেডি করে মা, আর ছেলে বেরিয়ে পড়লো। স্কুল গেইটে জুনায়েদকে নামিয়ে মা হেসে বললেন,“আম্মু, বাসায় গিয়ে চিকেন রান্না করব, তোমার জন্য। ঠিক আছে?”“ওকে, আম্মু।”জুনায়েদের মা, রান্না করছিল। হঠাৎ নিউজ পেল, জুনায়েদের স্কুলে বিমান ক্র্যাশ করেছে। হাত থেকে চিকেনের পাতিলটা পড়ে গেল। কাঁ'পা কাঁ'পা হাতে জুনায়েদের বাবাকে কল দিলো। তারপর, ছুটে বেরুলো ছেলেকে খুঁজতে। “জুনায়েদ, ঠিক আছেতো?”তারপর? তারপর, ২ ঘন্টা খোঁজার পর, হঠাৎ দেখতে পেলো, “পো/ড়া দে'হ নিয়ে জুনায়েদ তার আম্মুর দিকেই এগিয়ে আসছে। মুহুর্তেই পড়ে গেল মা'টিতে। শেষ নি’শ্বা’স ত্যাগ করলো জুনায়েদ। কলিজা কাঁ/পি/য়ে দেওয়ার মত চিৎ’কা’র করে উঠল জুনায়েদের বাবা-মা। মা কান্না করতে করতে বললেন,“আমার বাজান, আমার বাজানে, না করছিল আম্মু আজ আমি স্কুলে যাব না। আমি জো'র করে পাঠিয়েছি। আমার বাজানে আজকে বিকেলে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল আমার সাথে। ওহ বাজান, চিকেন খাইবা না তুমি? আব্বা, আমারে নিঃস্ব করে তুমি কই চইলা গেলা আব্বা?”জুনায়েদের আর বাসায় ফেরা হলো না, চিকেন খাওয়া হলো না, তার আম্মুর সাথে ঘুরা হলো না, আর, হোমওয়ার্কও করা হলো না।©মারশিয়া জাহান মেঘমাইলস্টোন কলেজ, ঢাকা উত্তরা।২১ জুলাই ২০২৫ ( ইতিহাসের কালো অধ্যায়)
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন একজনের মৃত্যুরাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন একজনের মৃত্যু হয়েছে। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে চিকিৎসাধীন একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এ নিয়ে এ ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল।একের পর এক দগ্ধদের নেওয়া হচ্ছে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটেরাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চলছে। একের পর এক দগ্ধদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হচ্ছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সেখানে ২৮ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বলছেন, দগ্ধদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। তবে তাৎক্ষণিকভাবে দগ্ধদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করে। পরে বিধ্বস্ত হয়।এ ঘটনায় মোট কতজন হতাহত হয়েছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আজ বেলা দুইটার কিছু পরে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা লিমা খান প্রথম আলোকে বলেন, আহত চারজনকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়েছে।ফায়ার সার্ভিসের জনসংযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেলা ১টা ১৮ মিনিটে এ দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। মাইলস্টোন কলেজে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা যায়। তাদের ইউনিটগুলো পৌঁছায় বেলা ১টা ২২ মিনিটে। এখন উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর, পূর্বাচল ফায়ার স্টেশনের আটটি ইউনিট কাজ করছে।
ফেনীতে বারবার বন্যা: টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে ফেনীর শহীদ মিনারে মানববন্ধনআজ (১২ জুলাই,২০২৫) বিকেল ৩ টায়, ফেনীর শহীদ মিনারে “ফেনী বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ পরিষদের”র উদ্যোগে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা, মানুষের জানমাল ও জীবিকা বিপন্ন হওয়ার প্রেক্ষাপটে টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণের দাবিতে ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এ কে এম আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে ও ওমর ফারুক শুভ'র পরিচালনায় এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে "ফেনী বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ পরিষদ" এর পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন ফেনী বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ পরিষদের অন্যতম উদ্যোক্তা এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক আজিজুর রহমান রিজভী।রিজভী বলেন, অনতিবিলম্বে পাঁচ দফা না মানলে আরো কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে। পাচঁ দফা দাবিসমুহ:১. ফেনী জেলা পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলীকে অপসারণ ও শাস্তি দিতে হবে। ২. সরকারের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প ইমেডিয়েটলি একনেকে পাশ করে বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে হবে। ৩. প্রতি মাসে ফেনী পাউবো মাঠে গণশুনানির মাধ্যমে জনগনকে বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ আপডেট জানাতে হবে। ৪. এবারের বন্যার জন্য দায়ী বাঁধ নির্মাণের ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ৫. বল্লা মুখা বাঁধ নির্মান ও মুছাপুর ক্লোজার পুনঃনির্মাণের পাশাপাশি বাঁধ সংরক্ষণের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এবি পার্টির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইন্জিনিয়ার শাহ আলম বাদল বলেন, টিএসসির অনুদান ও প্রধান উপদেষ্টার তহবিলের টাকা ফেনীর জন্য তুলা হলেও এ টাকা কোন কাজে লাগায় নাই। এ টাকার হিসেব সরকারকে দিতে হবে। শুধু এই টাকা দিয়েও বাঁধের কাজ শুরু করা যেতো।জামায়াতের জেলা প্রচার সম্পাদক আনম আবদুর রহিম বলেন, এ বন্যার দায় কিছুতেই ফেনী জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এড়াতে পারে না। তাই দায়িত্বজ্ঞানহীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নিতে হবে। জেলা যুবদল নেতা জামাল উদ্দিন গাজী বলেন, আমার টেকসই বাঁধের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবো। বাঁধ নিয়ে ফেনীর মানুষ আর কোন গড়িমসি চলবে না। প্লাটফর্মের অন্যতম উদ্যোক্তা ইন্জিনিয়ার এনামুল হক আজিম বলেন, রেমিট্যান্স এর দিক দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জেলা ফেনী হলেও এ জেলার বন্যা, বাঁধ নিয়ে সরকার উদাসীন। আমরা ফেনীবাসী ত্রান নয়, টেকসই বাঁধ চাই।পরশুরামের বাসিন্দা ফেনী এভারকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আবদুল গফুর বলেন, বর্ষাকাল এলেই ফেনীবাসী বন্যার আতংকে থাকে।আমরা এই আতংকের অবসান চাই।প্রতি বছর ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফেনী গুরুত্বপূর্ণ জেলা হওয়ার পর ও এমন পরিস্থিতি কোনভাবেই কাম্য নয়।ফুলগাজীর বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক আবুল কালাম শামীম বলেন, আমরা ফেনীবাসী ত্রানের কাঙাল না, এমনিতেই ফেনীর মানুষ টাকাওয়ালা। আমরা টেকসই ও স্থায়ী বাঁধ চাই এবং এটা অতিসত্বর করতে হবে। এছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও সমাজসেবক সায়েম শিপলু, খেলাফত মজলিসের জেলা নেতা আজিজ উল্লাহ আহমদী, কাজী সালাহউদ্দিন, সোহরাব হোসেন শাকিল, সালাহ উদ্দিন শাওন, জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম দল ফেনী জেলা নেতা সুমন পাটোয়ারী, মো: ইদ্রিস আলী, ওসমান গণি জাহিদ, ফ্রেন্ডস ইউনিটি ব্লাড ডোনার ক্লাবের প্রতিনিধি বাপ্পি, এমসি বয়েস ক্লাবের প্রতিনিধি রবিন, তুহিন, মারুফ প্রমুখ । সকল বক্তার একটাই আহ্বান—"প্রকল্প নয়, চাই টেকসই বাঁধ ও স্থায়ী সমাধান!মানববন্ধনে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং সর্বস্তরের ফেনীবাসী উপস্থিত ছিলেন।