রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজা’য় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে বাসায় ঢুকেন তিনি।এ সময় দুই পুত্রবধূকে তাকে ধরে রাখতে দেখা যায়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। উপস্থিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এ সময় স্লোগান দিচ্ছিলেন। যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে চার মাস পর মঙ্গলবার ১০টা ৪০ মিনিটে দেশে পৌঁছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।ইমিগ্রেশন শেষ করে বিমানবন্দর থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা পতাকা নেড়ে দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানান। জনসমাগমের উপচেপড়া ভিড়ের কারণে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এগিয়ে চলে ধীর গতিতে। দুপুর ১টা ২৫মিনিটে গাড়িবহর পৌঁছে যায় ফিরোজা’য়।
৪ সপ্তাহ আগে
আজ ২৬ এপ্রিল, সাটুরিয়ার ইতিহাসের এক শোকাবহ দিন। ১৯৮৯ সালের এই দিনে পৃথিবীর অন্যতম ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ঘটেছিল ধ্বংসের বিভীষিকা। আজ সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার ৩৬ বছর পূর্তি। ৩৬ বছর আগে এই দিনে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় নেমে এসেছিল ইতিহাসের এক ভয়াল দিন। ১৯৮৯ সালের ২৬ এপ্রিল বিকেলে বয়ে যাওয়া ধ্বংসাত্মক টর্নেডো মুহূর্তের মধ্যে শেষ করে দিয়েছিল হাজারো জীবন, স্বপ্ন আর সুখের সংসার। এখনও এই দিনটি এলেই আতঙ্ক আর কান্নায় ভিজে ওঠে সাটুরিয়ার মানুষ। মাত্র কয়েক মিনিটের তাণ্ডবে সাটুরিয়ার প্রাণ হারায় প্রায় ১,৩০০ মানুষ। আহত হয় অন্তত ১২ হাজার এবং প্রায় এক লাখ মানুষ হয়ে পড়ে গৃহহীন। উপজেলার ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাজার, স্কুল-কলেজ, সরকারি স্থাপনা ও হাজার হাজার গাছপালা একেবারে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। বিশেষ করে দুই শতাব্দী পুরনো সাটুরিয়া বাজার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সেদিনের ভয়াল স্মৃতিচারণ করে সাটুরিয়া বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী মো. পিয়ার আলী বলেন,"সকাল থেকেই প্রচণ্ড গরম ছিল, বাতাসের কোনো অনুভূতিই ছিল না। বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল শব্দে ধেয়ে আসে সেই বিভীষিকাময় টর্নেডো। মুহূর্তেই সবকিছু ধূলিসাৎ হয়ে যায়।" তিনি আরও জানান,"আমি নিজেও মাথায় গুরুতর আঘাত পাই। বহুদিন বিছানায় পড়ে ছিলাম। প্রতিবছর ২৬ এপ্রিল এলেই সেই ভয়ঙ্কর দিনটির দৃশ্য এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।" আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন,"আমরা চোখের সামনে দেখেছি কীভাবে পুরো গ্রামটা ধ্বংস হয়ে গেল। মানুষজন কাঁদছিল, আর্তনাদ করছিল, কেউ কেউ প্রিয়জনের খোঁজে ছুটছিল ধ্বংসস্তূপের মাঝে।" টর্নেডোটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে অনেকে কয়েকশ মিটার দূরে ছিটকে পড়েন। বহু পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, কয়েক হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়, প্রায় ৪০০ দোকানপাট উড়ে যায়, সরকারি খাদ্য গুদামসহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি তথ্যমতে, এটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রাণঘাতী টর্নেডোগুলোর একটি। টর্নেডোর পরপরই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী দল ও সরকার ব্যাপক উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। পুনর্বাসন কার্যক্রমও চালানো হয়, তবে হারানো প্রাণ আর ফিরে আসেনি। প্রায় ৪০০ দোকান সম্পূর্ণ ভেঙে যায়, সাটুরিয়ার সরকারি খাদ্য গুদামসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন ধ্বংস হয়। বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফসলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। বহু পরিবার হারায় তাদের পুরো সদস্য পরিবারকে। সেই সময় সরকারের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবক দল উদ্ধার কার্যক্রম ও পুনর্বাসন কাজে অংশ নেয়। বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ টর্নেডোর তালিকায় স্থান পাওয়া এই দুর্যোগটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হয়ে রয়েছে। ৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সাটুরিয়ার মানুষ সেই দিনের ভয়াবহতা ভুলতে পারেনি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আরও কার্যকর প্রস্তুতি ও সচেতনতা গড়ে তোলা হোক। আজ সাটুরিয়ার বিভিন্ন স্থানে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। একই সাথে দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য,১৯৮৯ সালের ২৬ এপ্রিল বিকেল।সাটুরিয়ার আকাশ ধীরে ধীরে কালো হয়ে উঠছিল। বাতাস যেন থমকে গিয়েছিল। আশপাশের প্রকৃতি নীরব। আর ঠিক সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে, বিকাল ৫টার দিকে, নেমে আসে এক বিভীষিকাময় দানব—টর্নেডো। মুহূর্তেই যেন সময় থেমে যায়, জীবন থেমে যায়। আজ ৩৬ বছর পরও, সেই দিনের কথা মনে করলেই শিউরে ওঠেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার মানুষ। আকাশে-বাতাসে তখন শুধুই কান্না আর আর্তনাদ। প্রচণ্ড ঘূর্ণির শক্তিতে উড়ে গিয়েছিল ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গাছপালা, মানুষের জীবন। ১৯৮৯ সালে দেশে দুর্যোগ পূর্বাভাসের অবকাঠামো ছিল না বললেই চলে। জনসাধারণের কাছে আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছায়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ভয়াবহ মাত্রায়। টর্নেডোর পরে সাটুরিয়ার মানুষ শুরু করে নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াই। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় শুরু হয় পুনর্বাসন। নতুন করে বাজার গড়ে ওঠে, ঘরবাড়ি বানানো হয়। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জন, স্মৃতি আর জীবনের স্বপ্নের কোনোটাই ফিরে আসেনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আজ অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে টর্নেডো-জাতীয় আকস্মিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও সচেতনতা এবং আগাম প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সাটুরিয়ার সেই ভয়াল টর্নেডো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির সামনে মানুষ কতটা ক্ষণিক, আর বেঁচে থাকার লড়াই কতটা দুর্দান্ত। মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আরিফুর রহমান অরি
১ মাস আগে
আজ ঢাকা যেন হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনের প্রতিচ্ছবি। রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে, গলা ফাটিয়ে শত শত মানুষ স্লোগান দিচ্ছেন ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’। চারপাশে শোভা পাচ্ছে লাল-সবুজ আর সাদা-কালো রঙের পতাকা।গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা আর বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে রাজধানী। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং আশপাশের এলাকাগুলো পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। একটাই দাবি— গণহত্যা বন্ধ করো, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন কর।‘মার্চ ফর গাজা’ গণজমায়েত কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। শাহবাগ ও আশপাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার বিকাল ৩টায় মূল কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ হয়। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসে মানুষ। মিছিলগুলো কোনোটি শাহবাগ দিয়ে, দোয়েল চত্বর দিয়ে, নীলক্ষেতের দিক থেকে উদ্যানে মিলিত হতে দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষের হাতে দেশের ও ফিলিস্তিনের পতাকা দেখা যায়।‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল সহকারে মানুষ আসতে শুরু করেন উদ্যানে। শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেত, টিএসসি, পলাশীসহ আশপাশের এলাকার রাস্তাগুলোয় একের পর এক মিছিল ঢুকে পড়ে মূল সমাবেশস্থলে। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা এবং নানান প্রতিবাদী স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডগুলোর মধ্যে লেখা ছিল— ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব?’, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত কর’, ‘ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান চাই’।সমাবেশস্থলে দেখা যায় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রাজনীতিক, ইসলামি বক্তা, মানবাধিকারকর্মী এবং সংস্কৃতিকর্মীরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ অভিনব পন্থায় প্রতিবাদ জানান—ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি বা মুখোশ বহন করে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে এ গণহত্যার সহযোগীদের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে। অনেকেই রক্তাক্ত (প্রতীকী) পোশাক পরে অংশগ্রহণ করেন, যা গাজার পরিস্থিতিকে দৃশ্যমান করে তোলে।
১ মাস আগে
চেক প্রতারণার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) জিয়াদুর রহমান আজ রোববার এ আদেশ দেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী আইএফআইসি ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাহিবুর রহমান। আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চেক প্রতারণার অভিযোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আইএফআইসি ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাহিবুর রহমান। আদালত সেদিন সাকিব আল হাসানসহ চারজনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ঠিক করা হয়েছিল ১৯ জানুয়ারি।সাকিব আল হাসানতবে আজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের পরিচালক ইমদাদুল হক ও মালাইকার বেগম। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী শাহাগীর হোসাইন আদালতে হাজির হননি। আজ বাদীপক্ষ থেকে সাকিব আল হাসান ও গাজী শাহাগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। আদালত পরে সাকিব আল হাসান ও গাজী শাহাগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। মামলার আরজিতে অভিযোগ আনা হয়েছে, সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাকিব। সাত বছর আগে (২০১৭ সাল) আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে প্রতিষ্ঠানটি দেড় কোটি টাকা ঋণ নেয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। পরে ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার দুটি চেক দেয় ব্যাংকে।তবে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক দুটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরে টাকা পরিশোধ করার জন্য সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডকে আইনি নোটিশ পাঠায় আইএফআইসি ব্যাংক। এরপরও টাকা পরিশোধ না করায় ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের মালিক সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
৪ মাস আগে