জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান মারা গেছেন
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। অঞ্জনার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর। তিনি জানান, আজ শনিবার দুপুরে এফডিসিতে অঞ্জনার জানাজা হবে। অঞ্জনার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান জানা গেছে, তিন সপ্তাহ ধরে অসুস্থ ছিলেন একসময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। শুরুতে জ্বর ছিল। সারা শরীর কেঁপে জ্বর আসত। একটা সময় ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছিল না। শেষে জানা যায়, তাঁর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এরপর অঞ্জনাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয় দিন তাঁকে রাখা হয় সিসিইউতে। সেখানকার চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল বদলে গত বুধবার অঞ্জনাকে নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তাঁর অবস্থার কখনো উন্নতি, কখনো অবনতি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন এই নায়িকা।বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অঞ্জনার অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। তবে অঞ্জনা অভিনীত ও একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’। ছবিতে তাঁর নায়ক ছিলেন সোহেল রানা। এ ছবির পর তাঁকে আর ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে হয়নি।১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর টানা কাজ করেছেন অঞ্জনা। একে একে অভিনয় করেন ‘মাটির মায়া’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ,‘আনারকলি’, ‘বিচারপতি’, ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, ‘অভিযান’, ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘নাগিনা’, ‘পরীণিতা’ ইত্যাদি বাণিজ্যিক সফল সিনেমায়।এক সাক্ষাৎকারে অঞ্জনা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায়। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। অঞ্জনা বিয়ে করেন পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে। তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।