১৯৭১ সালকে ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
শুক্রবার দুপুরে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক সংলাপে তিনি ১৯৭১ সালকে ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি তাত্ত্বিক নই, আমি রাজনীতির কোনো বিশেষজ্ঞ নই। আমি একেবারে মাঠকর্মী একজন। আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছি অর্থাৎ একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষগুলোর সঙ্গে আমি কাজ করে করে আমি এই পর্যায়ে এসেছি। আমার যেটা ধারণা যে আপনি জনগণকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু করা সম্ভব হবে না।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুর বলেন, ড. আলী রীয়াজ বলেছেন- তাদের কাছে এক লাখের বেশি বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে; খুব ভালো কথা সেইম টাইম আমি যেটা মনে করি যে তারা যদি আমি শুনেছি যে তারা তাদের প্রস্তাবটাকে তৈরি করে গভর্মেন্টের হাতে দেবেন এবং গভর্মেন্ট তখন আপনারা পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সঙ্গে বসবেন। উনারাই যদি আগে পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সঙ্গে বসতেন আমার মনে হয় সেটা যদি আরও ইফেকটিভ হতো আরও ভালো হতো এটা আমার কাছে মনে হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে মাইন্ডসেটটা একটা বড় জিনিস। আমার তো মাইন্ডসেটই হয়েছে যে কথাটা কিছুক্ষণ আগে ডক্টর মুশতাক বলেছেন আমার খুব ভালো লেগেছে- যে একটা বন্দোবস্তু তো ছিল টাকা দেব কাজ করিয়ে নেব ভালো সমস্যা নাই কিন্তু এখন তো আপনি অন্য সিস্টেমে যাচ্ছেন- তো সেই মাইন্ডসেটটা তো তৈরি করতে হবে। ওই তৈরি করার জন্য আপনার চর্চা দরকার- আমাকে গণতন্ত্রকে চর্চা করতে হবে ভুল হবে ত্রুটি হবে কিন্তু ওর মধ্যে দিয়ে আপনাকে ডেমোক্রেটিক সিস্টেমকে নিয়ে যেতে হবে।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, শুধু একটা কথা বলতে চাই খুব জরুরি কথা আমার কাছে মনে হয়েছে- আমরা যেন ৭১ কে ভুলে না যাই। ১৯৭১ সাল- এটাকে যেন আমরা কখনো ভুলে না যাই। আমরা যেন এই যে তারপরে ধারাবাহিক গণতন্ত্র যেন সংগ্রাম লড়াই ৭১-এর পর থেকে সেই সংগ্রাম প্রত্যেকটাই আমাদের মনে রাখা দরকার এবং সেই লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে আজকে আমরা ছাত্রদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে তাদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে আজকে আমরা এই জায়গায় এসে উপস্থিত হয়েছি। সুতরাং আমরা আপনাদেরকে এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি বলতে পারি যে আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা সবসময়ই গণতন্ত্রের সংস্কারের পক্ষে অর্থাৎ গণতন্ত্র পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার তার আমরা পক্ষে তার জন্য আমরা কাজ করব করেছি, কিন্তু একই সঙ্গে আমরা মনে করি যে জনগণকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে কোন কিছু করা যাবে না। সুতরাং আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়েই সেই কাজগুলো করব।
সংশ্লিষ্ট
একটা লড়াই হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে আরেকটা লড়াই হবে। একটা লড়াই হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। সেই লড়াইয়েও আমরা জয় লাভ করব।’ ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আজকের সমাবেশের আয়োজন করতে গিয়ে, এখানে আসতে গিয়ে আমাদের তিন ভাই ইন্তেকাল করেছেন। তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি।আল্লাহ তাদের জান্নাত দিন। পরিবারকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দিন।’ তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদরা যদি না দাঁড়াত, তাহলে ২৪ জীবনবাজি রাখা যুদ্ধটা না হলে, আজকে যারা বিভিন্ন দাবিদাওয়া করছেন, তাদের দাবিগুলো কোথায় থাকত। সুতরাং আমাদের প্রিয় শহীদদের হেয় করা যাবে না।অহংকার করা যাবে না। কোনো রাজনৈতিক দলকে অপমান করা যাবে না। যদিও কেউ এগুলো করে, তাহলে তাদের মধ্যে ফ্যাসিবাদের রোগ বীজ বুনেছে।’
বাংলাদেশে নতুন কোনো ‘গডফাদার’ সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় কক্সবাজার শহরে ‘জুলাই পদযাত্রা’ শেষে পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে শহীদ দৌলত ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।নাহিদ ইসলাম করেন, ‘গত সরকারের সময়ে কক্সবাজার সন্ত্রাস ও মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। যেমনভাবে নারায়ণগঞ্জে গডফাদার ছিল, ঠিক তেমনিভাবে কক্সবাজারেও ছিল।শেখ হাসিনার অধীনে দেশজুড়ে এক বড় গডফাদার ও তার অধীনে ছোট ছোট গডফাদাররা রাজত্ব করত। আমরা সে গডফাদারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছি। এখন আর কাউকে গডফাদার হতে দেওয়া হবে না।’ পর্যটনশিল্প নিয়ে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে পর্যটনের নামে আওয়ামী লীগ শুধু লুটপাট আর উচ্ছেদ চালিয়েছে।আমরা চাই, একটি পরিবেশবান্ধব পর্যটনব্যবস্থা গড়ে উঠুক—যেখানে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে।’ রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে তাদের অধিকারহীন অবস্থায় বছরের পর বছর বাংলাদেশে রেখে দেওয়া সমাধান নয়।এতে কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং স্বাভাবিক জীবনব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ড. ইউনূস এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই—রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত ও সম্মানজনক সমাধান করুন। তাদের নিজ দেশে নিরাপদে অধিকারসহ ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।’পদযাত্রা শুরু হয় দুপুর ১টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে। এনসিপির নেতাকর্মীরা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও পোস্টার হাতে স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন পুরো এলাকা।পদযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। পরে নেতৃবৃন্দ শহীদ দৌলত ময়দানে সমাবেশে অংশ নেন।
বাংলাদেশে গত ৫৪ বছর ধরে জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আযাদ।শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি। জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন চালু রয়েছে ব্রিটিশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন স্বরূপ। শতাধিক দেশে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চালু আছে।এ পদ্ধতি চালু হলে নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার রোধ হবে।’ তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে জনগণের ভোটের মূল্যায়ন হবে; এতে ফ্যাসিবাদ দূর হবে। জনগণের ভোটাধিকারের নিশ্চয়তার জন্য পিআর পদ্ধতির বিকল্প নাই।’হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির পক্ষে দেশের দুই তৃতীয়াংশ রাজনৈতিক দল।অবিলম্বে সরকারকে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্তি করে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অন্যথায় রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে এ দাবি আদায় করা হবে।
রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজা’য় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে বাসায় ঢুকেন তিনি।এ সময় দুই পুত্রবধূকে তাকে ধরে রাখতে দেখা যায়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। উপস্থিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এ সময় স্লোগান দিচ্ছিলেন। যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে চার মাস পর মঙ্গলবার ১০টা ৪০ মিনিটে দেশে পৌঁছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।ইমিগ্রেশন শেষ করে বিমানবন্দর থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা পতাকা নেড়ে দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানান। জনসমাগমের উপচেপড়া ভিড়ের কারণে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এগিয়ে চলে ধীর গতিতে। দুপুর ১টা ২৫মিনিটে গাড়িবহর পৌঁছে যায় ফিরোজা’য়।